22 Jan 2025, 10:56 am

ভারতের যে গ্রামে বিষাক্ত সাপ ও মানুষ একসঙ্গে ঘুমায় ; কোথাও আবার ৫০ বছরেও হয়নি কোন বিয়ে

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : বৈচিত্র্যময় ভারতবর্ষে প্রায় প্রতি বছরই লাখ লাখ বিদেশি পর্যটক আসেন বৈচিত্র্যের খোঁজে। কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারিকা, কচ্ছ থেকে কামাখ্যা- যেখানেই যান না কেন, কিছু না কিছু দেখে তাক লাগবেই পর্যটকদের। যা কিছুর ব্যাখ্যা মানুষ দিতে পারে না সেটাই তার কাছে রহস্য।

আবার ব্যাখ্যা দিলেই তো হলো না, তা মন মতোও হতে হবে। তাই তো বিশ্বজুড়ে অদ্ভুত বা রহস্যময় স্থানের অভাব নেই। সেসব স্থানের মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে ভারত। ঝুলন্ত স্তম্ভ, চৌম্বক পর্বত, কঙ্কালের হ্রদ।

এই যেমন ভারতে এমন কিছু গ্রাম আছে যেখানকার কাহিনি শুনলে চোখ কপালে উঠবে। মনে প্রশ্ন উঠতে পারে, বিপুলা এই পৃথিবীর কতটুকু জানি? চলুন তবে জেনে আসি ভারতের সেসব গ্রাম সম্পর্কে।

প্রতি ঘরে বাস করে বিষাক্ত সাপ : ভারতের মহারাষ্ট্রের সোলাপুরের নাম অনেকেই হয়তো শুনেছেন। সেখানকারই একটি ছোট গ্রাম শেতফল। গ্রামটিকে বলা হয় নাগ ধন্য গ্রাম। এই গ্রামের রাস্তাঘাট, ঘরবাড়িতে কিলবিল করে সাপ। গ্রামের নিয়ম অনুযায়ী, প্রত্যেক বাড়িতে একটি করে কেউটে বা চন্দ্রবোড়া থাকা আবশ্যক।

গ্রামের ছোট ছেলেমেয়েরা সাপের সঙ্গে খেলা করে, হাতে সাপ নিয়ে ঘোরে। সাপেরাও নিশ্চিন্ত মনে গ্রামে ঘুরে বেড়ায়। ছোবল দেয়া তো দূর, গ্রামবাসীর সঙ্গে তাদের সম্পর্ক বন্ধুত্বের। গ্রামবাসীর বিশ্বাস সাপেরা গ্রাম পাহারা দেয়। মজার ব্যাপার হলো, এই সাপ গ্রামবাসীর কোনো ক্ষতি করে না।

৫০ বছরে কোনো বিয়ে হয়নি যে গ্রামে : বিহারের একটি গ্রাম আজও একটি কারণে খবরের শিরোনামে থাকে। অদ্ভুত এই গ্রামে গত ৫০ বছর ধরে কোনো বিয়ের অনুষ্ঠান হয়নি। এটাই নাকি এই গ্রামের বৈশিষ্ট্য। গ্রামটির নাম বড়ওয়া কলা। এখানে ২০১৭ সালে প্রায় ৫০ বছর পর প্রথম বিয়ের অনুষ্ঠান হয়েছিল। বিহারের কাইমুর পাহাড়ের বড়ওয়া গ্রামের এই কাহিনি বেশ বিখ্যাত।

এই গ্রামটি ব্যাচেলরস্ ভিলেজ নামেও পরিচিত ছিল। প্রায় ১০ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে তবে এই গ্রামে পৌঁছানো যায়। ৫০ বছর পর গ্রামবাসীরা মিলে একটি রাস্তা তৈরি করেছিলেন। যার ফলে গ্রামে বিয়ের অনুষ্ঠান করা সম্ভব হয়েছিল।

প্রেমে নয়, গ্রামে জুতা পরা বারণ! : ভারতে এমন একটি গ্রাম আছে যেখানে জুতা পরা নিষেধ। গ্রামটি তামিলনাড়ুর কোডাইকানাল হিল স্টেশনের কাছে অবস্থিত, নাম ভেল্লাগাভি। গ্রামের জনসংখ্যা ২০০ থেকে ৩০০-র মধ্যে।

বাইরে থেকে আসা মানুষের জন্য এই গ্রামে বিশেষ নিয়ম করা হয়েছে। বাইরে থেকে আসা কোনো ব্যক্তি গ্রামে এসে জুতা পরলে তাকে কঠোর শাস্তি দেয়া হয়। সম্ভবত এই কারণেই এই গ্রামে কোনো সড়ক যোগাযোগ নেই। এখানকার মানুষ জঙ্গলের মধ্য দিয়ে যাতায়াত করে।

দুই দেশের মধ্যবর্তী একটি গ্রাম : নাগাল্যান্ডের একটি মনোরম এবং অত্যন্ত আকর্ষণীয় জেলা তথা শহর হলো মোন। এখানেই বাস করেন উল্কি আঁকা মুণ্ডু শিকারী নাগা আদিবাসী কোনিয়াকরা। মোনের লংওয়া গ্রামের একটি অদ্ভুত বাড়ি আছে। বাড়িটি ভারত ও মিয়ানমারের সীমান্তে অবস্থিত এবং বাড়ির অর্ধেক রয়েছে ভারতে বাকি অর্ধেক মিয়ানমারে।

বিভিন্ন রিপোর্ট থেকে জানা যায়, ব্রিটিশ মানচিত্রকাররা ভারতে তাদের শাসনের শেষ দিনগুলোতে এই সীমান্ত তৈরি করেছিলেন। এই রেখাটি ১৯৭০-৭১ সালে টানা হয়েছিল। এই বাড়িটি লংওয়া গ্রামের প্রধানের বাড়ি। মজার ব্যাপার হলো, গ্রামপ্রধানের পরিবারের সদস্যরা মিয়ানমারে খায় এবং ভারতে ঘুমায়।

পরিযায়ী পাখিরা আত্মহত্যা করে : আসামের এক রহস্যময় গ্রাম আছে, যেটি গণআত্মহত্যার জন্য বিখ্যাত। গ্রামের নাম জাটিঙ্গা। এই গ্রামে পরিযায়ী পাখিরা ঝাঁকে ঝাঁকে আত্মহত্যা করে।

রিপোর্ট বলছে, প্রতি বছর প্রায় এক হাজার পাখি এই গ্রামে উড়ে এসে মারা যায়। প্রতি বছর সেপ্টেম্বর মাসে এই অদ্ভুত ঘটনাটি ঘটে। পাখিদের এই অলৌলিক কীর্তি দেখতে গ্রামে হাজির হন দেশ-বিদেশের হাজার হাজার পর্যটক। যদিও পাখিগুলো কেন এই গ্রামে এসে মারা যায়, তা আজও জানা যায়নি। সৌজন্যে : ঢাকা টাইমস

 

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *